সিলেটে সড়ক-মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল কেন থামছে না? সড়ক দুর্ঘটনায় অনেক তাজা প্রাণ অকালে ঝরে যাচ্ছে। শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত কেউ রেহাই পাচ্ছেন না সড়ক দুর্ঘটনা থেকে। গত ৩-৪ মাসে সিলেট বিভাগের মধ্যে সড়কে ঝরে গেছে অনেক তাজা প্রাণ এবং পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন অনেকেই।

সিলেট বিভাগের অনেক সড়ক দুর্ঘটনা তথ্য তুলে ধরতে চাই- সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলায় মাইক্রোবাস উল্টে নিহত হয়েছিলেন ৩জন এবং আহত হয়েছেন ৪০ জনের মতো, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন ১জন, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ইং মোটরসাইকেল এবং ট্রলির সাথে ধাক্কা লেগে নিহত হয়েছিলেন ২জন। বিয়ানীবাজার উপজেলায় চারখাই বাজারে বাসের ধাক্কায় নিহত হয়েছিলেন ১ পথচারী, চারখাই বাজারের কাছাকাছি সিএনজি উল্টে শিশুসহ নিহত হয়েছিলেন ২জন, শেওলা পল্লীবিদ্যুৎ এর সামনে ট্রাকের ধাক্কায় ১ পথচারী নিহত হয়েছিলেন। গোলাপগঞ্জে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২জন নিহত হয়েছিলেন। মৌলভীবাজার জেলা কুলাউড়া উপজেলায় প্রাণ হারিয়েছেন দুই নারী ও এক শিশুর। এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন। সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে মোটরসাইকেল ও পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে অজ্ঞাত মহিলাসহ দু’জন নিহত হয়েছেন। সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২ আরোহী নিহত হয়েছেলেন। ইদানীংকালে সড়ক দুর্ঘটনায় দেখাগেছে আমেরিকা প্রবাসীসহ অনেকে নিহত হয়েছেন সড়ক দুর্ঘটনায়।

২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে সিলেট বিভাগের সড়ক দুর্ঘটনার অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন। সুবিদবাজারে ট্রাকের ধাক্কায় নিহত হয়েছিলেন ১জন পথচারী মহিলা। সিলেট হবিগঞ্জ মাধবপুর এলাকায় দীর্ঘ ২৪ বছর পর দেশে ফিরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হলেন আমেরিকা প্রবাসী। সিলেট নগরীর টিলাগড় পয়েন্ট কার উল্টে ২ জন ছাত্র নিহত। আরো অনেকে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন সংবাদমাধ্যমে এসেছে আবার অনেক দুর্ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে আসেনাই।

গত ৩ -৪ মাসের সিলেট বিভাগের উদাহরণস্বরূপ সড়ক দুর্ঘটনা পরিসংখ্যান তুলে ধরলাম। আসুন আমরা মূল কথায় চলে আসি, সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর জন্য কে বা কাকে দায়ী করবো ? কারণ অকাল মৃত্যু আমরা কেউ চাই না। তবে ইদানিং কালে লক্ষ্য করেই দেখা গেছে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন গাড়ির ওভার স্পিড, ওভারলোড এবং ওভারটেকিং এর কারণে। জানিনা এই সড়ক দুর্ঘটনায় অকাল মৃত্যুর মিছিল কবে থামবে। বর্তমান সরকার সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল থামাতে ২০১৮ ইং ট্রাফিক আইন সংসদে পাশ করেছেন।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, পরিবহন চালকের মানসিকতার পরিবর্তন করা প্রয়োজন। অর্থ্যাৎ যথোযুক্ত মটিভেশন এবং প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের মানসিক উন্নতি ঘটানো না গেলে সড়ক দুর্ঘটনার হার কমিয়ে আনা সম্ভব নয়। মোটরসাইকেল আরোহীরা হেমলেট না ব্যবহারের কারণে সিলেট বিভাগে সবচেয়ে বেশী মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন এবং এই হেমলেট ও প্রতিযোগিতামূলক চালনার জন্য অনেকেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যানবাহনের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন। আরও দেখা গেছে কোন কোন মোটরসাইকেল আরোহী নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছ বা বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে ধাক্কার কারণে মাথায় আঘাতের কারণে মর্মান্তিক মৃত্যুর বরণ করেন।

মোটরসাইকেল আরোহীগন হেলমেট ব্যবহার না করার কারণে মাথায় মারাত্মকভাবে আঘাতের কারণে মৃত্যুর মূখে ঢলে পড়েন।মোটরসাইকেল আরোহীগন হেমলেট ব্যবহার করে নিজেকে রক্ষা করুণ এবং অন্যকেও সচেতন করুন।দূর্ঘটনার কবল থেকে আমার জীবন আমাকেই রক্ষা করতে হবে সেজন্য নিজে সচেতন হই অন্যকেও সচেতন করি।

আমি মনে করি আমরা নিজ থেকে যদি সড়ক দুর্ঘটনার জন্য সচেতন না হতে পারি তাহলে কখনোই সড়ক দুর্ঘটনার মিছিল থামবে না।

লেখক: সাধারণ সম্পাদক, নিরাপদ সড়ক চাই, সিলেট জেলা।